দেব জমিদার বাড়ির নবম বংশধর ব্রজেন্দ্র চন্দ্র দেব। তিনি মাধবপুর উপজেলার বারাচান্দুরা দেব জমিদার বাড়ির অষ্টম বংশধর রাজকুমার চন্দ্র দেব-এর ছেলে। ব্যক্তি জীবনে একজন সমাজ সেবক হিসেবে এলাকায় বেশ পরিচিত ছিলেন। ছোট বেলা থেকেই তিনি অসহায় সহজ সরল ও দুঃখী মানুষের পাশে থেকে মানব সেবায় অভ্যস্ত ছিলেন এই জমিদার পুত্র । এলাকায় একজন সৎ, ন্যায়, নীতিবান, উদার, সমাজ সংস্কারক হিসেবে সর্বোপরিচিত। শুধু সুশীল সমাজ নয়, তরুন-নবীন, যুব-প্রবীণ সমাজে রয়েছে তার যথেষ্ঠ সুনামের কথা।
জানা যায়, ১৫ মার্চ ১৯৩২ সালে সুনাম ধন্য সম্ভ্রান্ত দেব জমিদার বংশে জন্ম গ্রহন করেন তিনি। তাঁর পিতা ছিলেন দেব জমিদার বাড়ির অষ্টম বংশধর রাজকুমার চন্দ্র দেব। মাতা- মাতঙ্গী দেবী। এই জমিদার বাড়ির প্রথম জমিদার ছিলেন রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব। তৎকালীন সমগ্র ভারতবর্ষ শাসনকারী ব্রিটিশরা প্রায় দুইশত বছর শাসন করার এক পর্যায়ে ভারতের নিরীহ মানুষ ব্রিটিশদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সিপাহী বিদ্রোহ আন্দলোন শুরু করেন। এই সিপাহী বিদ্রোহ আন্দোলনের একজন নেতৃত্ব দানকারী ছিলেন রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব। তিনি পরবর্তীতে ব্রিটিশদের ধরপাকড়ের কারণে বর্তমান বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত বারাচান্দুরা জমিদার বাড়ি স্থাপন করেন ও পরবর্তীতে জমিদারীত্ব লাভ করলেন। এই জমিদার বাড়ির নবম বংশধর হলেন ব্রজেন্দ্র চন্দ্র দেব। উনার পিতা রাজকুমার দেব ব্যবসায়ীক সূত্রে পারিজমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার অন্তর্গত ফান্দাউক বাজারে। পরবর্তীতে রাজকুমার দেব মারা গেলে পরিবারের হাল ধরার জন্য ব্যবসা শুরু করেন ব্রজেন্দ্র চন্দ্র দেব। তিনি স্থানীয় ফান্দাউক বাজারে তামা-কাসা-পিতলের জিনিস পত্রের ব্যবসা করে নিজ এলাকায় বেশ সুনাম অর্জন করেছিলেন।
স্থানীয়রা বলেন, ‘১৯৮৮ সালের বন্যায় নিজ এলাকায় ও বিভিন্ন স্থানের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে বিনামূল্যে প্রায় সাতদিন পায়ে হেটেঁ ও নৌকা যুগে বিভিন্ন স্থানের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছিলেন ব্রজেন্দ্র চন্দ্র দেব। বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কাজে ভূমিকা রেখেছিল তিনি। ১৩ জানুয়ারি ১৯৯৭ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।