ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৫ জন অঙ্গার

admin
  • আপডেট টাইম : জানুয়ারি ১৩ ২০২৩, ২১:৪২
  • 573 বার পঠিত
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ৫ জন অঙ্গার

নিজস্ব প্রতিবেদক/ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই শিশুসহ একই পরিবারের ৬ সদস্যের মধ্যে ৫ জনই মারা গেছেন। বাড়ির কর্তা খোকন বসাককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ৫ নম্বর পারুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বসাক পাড়ায় এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আগুনে বাড়ির কর্তা খোকন বসাকের পিতা কাঙ্গাল বসাক (৭০), মাতা ললিতা বসাক (৬০), স্ত্রী লাকি বসাক (২৫), পুত্র সৌরভ বসাক (১২) ও কন্যা সায়ন্তী বসাক (৬) পুড়ে মারা গেছেন।

খোকন বসাকের শরীরের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখান থেকে ঢাকায় নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোকন বসাকের বাড়িতে শুকনো পাতা দিয়ে রাতের রান্না হয়েছিল। পরে সে আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে না যাওয়ায় তা থেকে আগুন ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পারুয়া ইউপি চেয়ারম্যান এখতেহার হোসেন জানান, রাতে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। আগুন নেভাতে সহযোগিতা করেন।

তিনি বলেন, বাড়িতে একটিই দরজা। সেই দরজার মুখে ছিল একটি সিএনজি অটোরিকশা। দরজায় ছিল ভেতর থেকে তালা। ফলে আগুন লাগার পর কেউ বেরুতে পারেনি। গভীর রাত হওয়ায় প্রতিবেশী ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মী আসার আগেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুব মিলকি বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান সুমন বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে ২টা ১০ মিনিটে তারা ঘটনাস্থলে যান। ভোর রাত ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শেষে একটি কক্ষ থেকে সবার অঙ্গার দেহ বের করে আনা হয়।

বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আধা পাকা ঘরের চারটি কক্ষে ঘরের আসবাবপত্র কিছুই নেই। রান্নাঘরের চুলার হাঁড়ি পাতিল ছড়িয়ে ছিটিয়ে। আলমারির নতুন কাপড় চোপড়ও পুড়ে গেছে। ঘরের পাশে মৃতদের সৎকারের জন্য আম গাছ কেটে তৈরি করা হচ্ছে।

আগুনে মেয়ে ও নাতি-নাতনির মারা যাওয়ার খবর পেয়ে ভোরে ছুটে এসেছেন চিনু দে। আহাজারি করতে করতে তিনি বলেন, লাকি এখন কাকে ডাকবেন, কার বাড়িতে বেড়াতে আসবেন।

লাকির বড়বোন মনি দে ও ছোট বোন ঝর্ণা দে খবর শুনে এসেছেন। তারা জানান, কয়েকদিন পর ছুটির দিনে রাঙামাটি বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু এখন কাকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন। রাতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ছুটে আসেন প্রত্যক্ষদর্শী রাজু বিশ্বাস।

তিনি বলেন, আগুন লাগার কিছুক্ষণ পুরো শরীরে আগুনসহ রান্নাঘরের দরজা ভেঙ্গে বেরিয়ে আসেন খোকন। এই সময় পরিবারের শিশু, বৃদ্ধসহ ৫ জন চিৎকার করছেন তাদের ঘর থেকে বের করার জন্য। কিন্তু আগুনের জন্য তারা ঢুকতে পারছেন না। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিসের লোকজন খোকন বসাকের বাবা কাঙ্গাল বসাক ও মা ললিতা বসাকের কক্ষ থেকে ৫ জনের অঙ্গার দেহ উদ্ধার করেন।

প্রতিবেশী স্বপন শীল (৫০) বলেন, ঘরের পাশে মন্দিরে কীর্তন অংশ নেওয়ার পর পরিবারের ৬ জন খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। খোকন কীর্তনের উদ্যোক্তা। তিনি কীর্তন গানের আয়োজন করেন।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর