প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঘুমন্ত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

admin
  • আপডেট টাইম : নভেম্বর ১৯ ২০২২, ২০:২১
  • 587 বার পঠিত
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঘুমন্ত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

আখলাছ আহমেদ প্রিয়, হবিগঞ্জ \

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামে তহুরা বেগম নামে এক নারীকে গলা কেটে হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। জুয়া খেলার জন্য টাকা না দেওয়ায় পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। তাই স্ত্রী তহুরা বেগমকে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন স্বামী জারু মিয়া। পরিকল্পনা অনুযায়ী স্ত্রী তহুরা বেগমকে হত্যা করেন স্বামী।
শনিবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাকির হোসেনের আদালতে হত্যাকাÐের ঘটনায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করেন আসামী জারু মিয়া। আসামী জারু মিয়া (৫৫) নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়- গত শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে নবীগঞ্জ পৌর এলাকার চরগাঁও গ্রামে স্বামীর বসতঘর থেকে তহুরা বেগমের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার খবর পেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, নবীগঞ্জ-বাহুবল সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার আবুল খয়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তহুরা হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় তহুরা বেগমের স্বামী জারু মিয়াকে। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জারু মিয়া (৫৫) হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে। এ ঘটনায় জারু মিয়াকে আসামী করে তহুরা বেগমের পূর্বের স্বামী জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে আল-আমিন বাদী মামলা দায়ের করেন।
আসামী জারু মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়- নিহত তহুরা বেগম প্রায় তিন যুগ পূর্বে গ্রথমে জাহাঙ্গীর মিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কয়েক বছর পর তহুরা বেগমের সাথে বিচ্ছেদ হয় জাহাঙ্গীর মিয়ার। পরে তহুরা বেগম জারু মিয়ার সাথে দ্বিতীয় বিবাহে বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর তাদের পরিবারে মঞ্জিল মিয়া ও রমজান আলী নামে দুই সন্তান জন্মগ্রহণ করেন। জারু মিয়া তহুরা বেগমকে বিবাহের প‚র্বে আরো ২টি বিবাহ করেন। তহুরা বেগমের স্বামী জারু মিয়া একজন জুয়াড়ী। প্রায় সময় জুয়া খেলার টাকার জন্য তহুরা বেগমকে মারপিট করে আসছিল। এ ঘটনায় তহুরা বেগমের সাথে জারু মিয়ার পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। ফলে জুয়ার টাকা জোগার করতে না পেরে পারিবারিক কলহের জের ধরে জারু মিয়া স্ত্রী তহুরা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যার পর প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা ছিল তার। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতের কোনো এক সময় আসামী জারু মিয়া হাঁটু দিয়া তহুরার মুখ চেপে ধরে ঘরে থাকা বাঁশ কাটার ধারালো দা দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় তহুরা বেগমের গলা কেটে দেহ থেকে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করে।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ বলেন- ‘তহুরা বেগমকে হত্যা করে স্বামী জারু মিয়া প্রথমে ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে কে বা কারা তার স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেন। ভিন্ন ভিন্ন সময় জারু মিয়ার কথার পরিবর্তন হলে সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফজাতে নেয় পুলিশ। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেন জারু মিয়া। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর