হবিগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

admin
  • আপডেট টাইম : অক্টোবর ৩০ ২০২২, ২০:৫৫
  • 601 বার পঠিত
হবিগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

আখলাছ আহমেদ প্রিয়, হবিগঞ্জ \

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ খাঁন ও তার এক সহযোগীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মাধবপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জগদীশপুরে অবস্থিত বিএইচএল সিরামিক কোং লিমিটেড ও বাংলাদেশ হার্ডল্যান্ড সিরামিক কোম্পানীর ব্যবস্থাপক মোঃ আবু সালমান আল রিজভী গত শনিবার রাতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় চেয়ারম্যান মাসুদের অন্যতম সহযোগী একই উপজেলার বেজুড়া গ্রামের এক ব্যক্তিসহ আরো ৬ জনকে আসামী করা হয়েছে।
অন্য আসামীরা হলো, শাকিল পিতাঃ সফিক মিয়া, নাছির মিয়া পিতাঃ অজ্ঞাত, কুদ্দুস মিয়া, পিতাঃ অজ্ঞাত, সাহাব উদ্দিন, পিতাঃ একরাম হোসেন ও অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জন। আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন মাধবপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, দেশের ক্রমবর্ধমান শিল্পায়নের লক্ষ্যে বিএইচএল সিরামিক কোং লিমিটেড ও বাংলাদেশ হার্ডল্যান্ড সিরামিক কোং লিঃ (বাংলাদেশ ও চায়না যৌথ মালিকানাধীন) আইএসও সনদপ্রাপ্ত উৎপাদন প্রতিষ্ঠান। এ শিল্প প্রতিষ্ঠান সরকারের সকল শর্তাবলী সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ হতে ছাড়পত্র ও সনদপত্র গ্রহণপূর্বক বিগত প্রায় তিন বছর যাবৎ অত্যন্ত সু-নামের সাথে উৎপাদন ও বিক্রয় কার্য পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু আসামীরা এলাকার প্রভাবশালী, উশৃংখল ও চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক। ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ খাঁন বিগত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর কোম্পানীর ডিজিএম (কমার্শিয়াল) মোঃ ইলিয়াছ টিটোকে ফোনে এবং গত ৫ মার্চ সন্ধ্যায় অন্যান্য আসামীদের নিয়ে কোম্পানীর অফিসে প্রবেশ করে অফিসে অবস্থানরত কর্মকর্তাদের নিকট ইউপি নির্বাচনে ব্যয়কৃত অর্থ বাবদ ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন এবং স্যাম্পল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই কোম্পানীর সকল কাঁচামাল তার মাধ্যমে নেয়ার জন্য আদেশ করেন। অন্যথায় গেইটের বাইরে কোম্পানীর কর্মকর্তা, কর্মচারীদের হত্যা, কোম্পানীতে কোন কাঁচামালের গাড়ী ঢুকতে বা বের হতে দিবে না, ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সেবা হতে এ কোম্পানীকে বঞ্চিত রাখবে ও কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ করতে যা যা করার করবে বলে হুমকি প্রদান করেন। ঐদিন রাতে কোম্পানীর মেকানিক্যাল ইনচার্জ মোঃ খায়রুল ইসলাম উিউটি শেষে প্রতিদিনের ন্যায় পায়ে হেটে বাসায় যাওয়ার সময় জগদীশপুর মন্দিরের কাছে পৌছানো মাত্রই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা এলোপাতাড়ী হামলা চালায়। পর দিন সকালে আসামী মাসুদ খান এর সঙ্গীরা রামদা, লোহার রড, লাঠি নিয়ে কোম্পানী ভাংচুর করার উদ্দেশ্যে জোড়পূর্বক কোম্পানীর গেইটে প্রবেশ করতে চেষ্টা করে। তাদেরকে প্রবেশ করতে বাধা দিলে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত সদস্যদেরকে মারধর করে এবং মোটরসাইকেলে বসে চেয়ারম্যান মাসুদ খাঁন উত্তেজিত হয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে কোম্পানী চাঁদা না দেওয়া পর্যন্ত অন্যান্য আসামীদেরকে এই কোম্পানীতে কোন গাড়ী ঢুকলে বা বের হলে ড্রাইভার, হেলপার ও কোম্পানীর কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে খুন করার আদেশ দেন।
অপরদিকে, আসামী অলিদ মিয়ার নেতৃত্বে কোম্পানীর গেইটে কাঁচামাল নিয়ে আসা গাড়ীর ড্রাইভার, হেলপার, সিকিউরিটি ও কর্মকর্তা, কর্মচারীদেরকে মারধর করে এবং কোম্পানীতে সকল কাঁচামালের গাড়ী প্রবেশ ও বের হওয়া বন্ধ করে দেয় এবং সবাইকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসব বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট থানায় অনেক গুলো জিডিও করা হয়েছে। কোম্পানীর ট্রেড-লাইসেন্স নবায়ন করতে চেয়ারম্যান মাসুদ খাঁনের নিকট তার অফিসে গেলে পুনরায় সে মোটা অংকের চাঁদা দাবী করে। অন্যথায় ট্রেড-লাইসেন্স নবায়ন হবে না বলে কর্মকর্তাদেরকে জানিয়ে দেয় এবং কোম্পানীর উৎপাদন বন্ধের হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পত্র প্রেরণ করলেও আসামী চেয়ারম্যান মাসুদ খাঁন কোন গুরুত্বারোপ করে নাই।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর