গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে মানবাধিকারকর্মী ও দুই সংস্থাকে শান্তির নোবেল

admin
  • আপডেট টাইম : অক্টোবর ০৭ ২০২২, ২১:১৪
  • 595 বার পঠিত
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে মানবাধিকারকর্মী ও দুই সংস্থাকে শান্তির নোবেল

নিজস্ব প্রতিবেদক/ নাগরিক সমাজের মৌলিক অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ভূমিকা রাখায় এক মানবাধিকারকর্মী ও দুই সংস্থাকে এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার নরওয়ের রাজধানী অসলোতে নোবেল ইনস্টিটিউট শান্তির নোবেলজয়ী ব্যক্তি ও দুটি সংস্থার নাম ঘোষণা করে। ১০৩তম নোবেল শান্তি পুরস্কার পেলেন বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি এবং রাশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনের মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস।

নোবেল কমিটি বলেছে-যুদ্ধাপরাধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরায় তাদের ভূমিকা অসাধারণ। শান্তি আর গণতন্ত্রের জন্য নাগরিক আন্দোলন কতটা জরুরি-সম্মিলিতভাবে তারা সেটাই দেখিয়েছে। নোবেল পুরস্কারের এক কোটি সুইডিশ ক্রোনার (প্রায় ৯ লাখ ডলার) তারা সমানভাবে ভাগ করে নেবেন।

ইইউ প্রধান উরসুলা ফন ডার লেইন বলেছেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো নারী ও পুরুষদের অসামান্য সাহসিকতার স্বীকৃতি দিয়েছে নোবেল কমিটি। তারা গণতন্ত্রের লড়াইয়ে সুশীল সমাজের প্রকৃত শক্তি দেখিয়েছে।

শান্তির নোবেলজয়ী অ্যালেসের বয়স ৬০ বছর। তিনি বর্তমানে বেলারুশের কারাগারে আছেন। বিচার-পূর্ব আটকাবস্থায় আছেন তিনি। অ্যালেস দেশটির ভিয়াসনা হিউম্যান রাইটস সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বেলারুশের রাজপথে বিক্ষোভকারীদের ওপর দেশটির কর্তৃত্ববাদী নেতা আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর নৃশংস দমন-পীড়নের প্রতিক্রিয়ায় মানবাধিকার সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালে অ্যালেসকে প্রথম গ্রেফতার করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে তিনি কারামুক্ত হন। বেলারুশে কারচুপির নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক বিক্ষোভের জেরে ২০২০ সালে অ্যালেসকে আবারও আটক করা হয়। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থেকে যান লুকাশেঙ্কো।

অ্যালেস সম্পর্কে নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটি বলেছে, তিনি তার দেশে গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। নরওয়ের নোবেল কমিটির চেয়ার বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন বলেছেন, অ্যালেস বেলারুশে মানবাধিকারের জন্য তার লড়াইয়ে এক ইঞ্চিও ছাড় দেননি।

সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস : সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস (সিজিএস) ইউক্রেনের একটি শীর্ষস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন। এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৭ সালে। দখলকৃত ক্রিমিয়ায় রাজনৈতিক নিপীড়ন পর্যবেক্ষণ করে আসছে সিজিএস। সংগঠনটি দনবাস যুদ্ধের সময় সংগঠিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ নথিভুক্ত করেছে। তারা ক্রেমলিনের রাজবন্দিদের মুক্তির জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচার চালিয়ে আসছে। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এই হামলার পর থেকে সংগঠনটি ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধ শনাক্ত ও নথিভুক্তের প্রচেষ্টায় নিযুক্ত রয়েছে।

মেমোরিয়াল : মেমোরিয়াল রাশিয়ার মানবাধিকার সংগঠন। চলতি বছরের শুরুর দিকে সংগঠনটি বন্ধ করে দেয় দেশটির সরকার। ১৯৮৭ সালে মেমোরিয়াল প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনেরও চার বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় এটি। মেমোরিয়াল রাশিয়ার সবচেয়ে পুরোনো মানবাধিকার সংগঠন। তারা ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সোভিয়েত যুগে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কাজ করেছে। রাশিয়ার মানবাধিকার নিয়েও কাজ করেছে সংগঠনটি।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর