হাওরে পানি কমায় খাল-বিলে মাছ ধরায় ব্যস্ত জেলেরা

admin
  • আপডেট টাইম : সেপ্টেম্বর ০৩ ২০২২, ২০:১৩
  • 598 বার পঠিত
হাওরে পানি কমায় খাল-বিলে মাছ ধরায় ব্যস্ত জেলেরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি  \ বর্ষা শেষে শেষের পথে। কমছে হাওরের পানি। নদী-নালা, খাল-বিল, জলাশয়সহ ধানক্ষেতে আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ। এ কারণে জেলার হাওর বেষ্টিত বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামেগঞ্জে মাছ ধরায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ছোট-বড় সব বয়সী মানুষ। কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে আবার কেউ কেউ শখের বসে মাছ ধরায় নামছেন। প্রতি বছরই বর্ষার নতুন পানি আসার সময় ও বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার সময় এতদঞ্চলে মাছ ধরার ধুম পড়ে। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বরং এবছর বন্যার পানিতে বিভিন্ন পুকুর ও মাছের খামার তলিয়ে গিয়ে মাছ হাওরের পানিতে ভেসে যাওয়ায় উৎসাহ-উদ্দীপনার বেড়েছে। বন্যার শুরুতে প্রতিটি গ্রামগঞ্জেই মাছ ধরার উৎসব লক্ষ্য করা গেছে। ঠিক তেমনি বর্ষার শেষে শরৎকাল এসে পানি কমায় পুনরায় মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়েছে। ভোর হতে না হতেই শুরু হয় মাছ ধরার পালা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠে। সকলেই সরঞ্জামাদি নিয়ে এবং শিশু-কিশোররা খালি হাতেই মাছ ধরতে নেমে পড়ে। যেখানে হাঁটু পানি সেখানে সেচের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর মৎস্য শিকারিরা মাছের আশ্রয়স্থলে নামছে। দুপুর পর্যন্ত চলে মাছ ধরার এই প্রক্রিয়া। পরে নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মাছ হাটবাজারে বিক্রি করে দেয়। মাছ ধরায় শামিল হতে পেরে শিশু-কিশোরদের মধ্যে বাঁধভাঙ্গা আনন্দ লক্ষ্য করা যায়। কাদা-পানিতে সারা শরীর মাখামাখি করে তাদেরকে মাছ ধরার আনন্দে বিভোর হতে দেখা যায়। কই, শিং, বাইম, মাগুর প্রভৃতি দেশি জাতের জিয়ল মাছই ধরা পড়ে বেশি। তাছাড়া টেংরা, পুঁটি, খইলসা, শোল, টাকি, বোয়াল, চিংড়ি, কাতলা, সিলভার কার্প প্রভৃতি মাছ তো রয়েছেই। বর্তমানে গ্রামগঞ্জের হাটবাজারে প্রচুর পরিমাণে দেশীয় মাছ পাওয়া যাচ্ছে এবং অন্যান্য সময়ের তুলনায় দামও এখন অনেক কম বলে লোকমুখে শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের জাল, চাঁই (বাঁশের তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ), কুচা, পলো দিয়ে এবং খাইঞ্জা খিচে (পানি সেচে) মাছ ধরছেন লোকজন। বাজার ছাড়াও অনেক মাছ শিকারীদেরকে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়ক, বানিয়াচং-নবীগঞ্জ সড়ক, আজমিরীগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে মাছ নিয়ে বিক্রির জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের সুটকী ব্রীজের দক্ষিণে কয়েকজন মধ্যবয়সী মানুষের সাথে একজন কিশোরকে মাছ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, একটি হাইস্কুলে ৭ম শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় ধানক্ষেতে খাইঞ্জা খিচে মাছ ধরে বিক্রি করতে বসেছে। স্কুল খোলা থাকলেও প্রতিদিন সকালে ফেলুন জাল দিয়ে পরিবারের খাবারের মাছ ধরে বলেও সে জানায়।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর