শতভাগ উৎসব ভাতাসহ শিক্ষক সমিতির ১১ দফা দাবি

admin
  • আপডেট টাইম : জুন ২৯ ২০২২, ২২:০০
  • 599 বার পঠিত
শতভাগ উৎসব ভাতাসহ শিক্ষক সমিতির ১১ দফা দাবি

স্টাফ রিপোর্টার \ সারা দেশে শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। সেই সঙ্গে শতভাগ উৎসব ভাতাসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি জানানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সভাপতি বজলুর রহমান মিয়া।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতির উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য বাবু রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কাশেম, সহ-সভাপতি আলী আসগর হাওলাদার ও বেগম নূরুন্নাহারসহ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
সম্প্রতি ঢাকার সাভারে শিক্ষক হত্যা, নড়াইলে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানো এবং বগুড়া, কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নারায়গঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের নির্যাতন ও লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদ জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এসব ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। এছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতাসহ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের লক্ষ্যে ১১ দফা দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
লিখিত বক্তব্যে সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়া বলেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া এবং ৫০০ চিকিৎসা ভাতা পান। অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগে অর্থাভাবে বিনা চিকৎসায় মারা যান। এছাড়া কয়েক বছর ধরে কোনো সুবিধা না দিয়েই অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে অমানবিকভাবে বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কোনো বদলি ও পদেন্নতির সুবিধা নাই। আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে পাহাড় সমান বৈষম্য। এছাড়া বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের বেতন সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকদের একধাপ নিচে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেন, ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের চাকরির বয়স আগের মতোই রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে যে দাবী গুলো তোলা হয়, মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ, আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মতো পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান, পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালু করা, পেনশন প্রথা চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা দেওয়া এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কাটা বন্ধ করা, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সভ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল ৬ষ্ঠ ও সপ্তম গ্রেডে দেওয়া, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি প্রথা চালু করা, শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করা,পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন ও শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন,করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা ও শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে শিক্ষা সহায়ক ডিভাইস দেওয়া, ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সদস্যদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সব বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি-২০১০ দ্রæত বাস্তবায়ন করা।
তাছাড়া সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শতভাগ উৎসব ভাতা ও শিক্ষক নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা না হলে ঢাকায় মহাসমাবেশসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর