হবিগঞ্জে পানিতে ভেসে গেলো ৮ হাজার খামারীর স্বপ্ন

admin
  • আপডেট টাইম : জুন ২৭ ২০২২, ২২:৫৩
  • 594 বার পঠিত
হবিগঞ্জে পানিতে ভেসে গেলো ৮ হাজার খামারীর স্বপ্ন

আখলাছ আহমেদ প্রিয় \
চলতি বন্যায় জেলায় ৭ উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার পুকুর, ফিশারী ও মাছের খামার তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ৫ হাজার ৮শ ৫৩ জন মৎস্য চাষী। তাদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকার।
এদিকে, ঋণ নিয়ে জেলার অনেক খামারী তাদের ফিশারীতে মাছ চাষ করেন। বন্যার পানিতে ফিশারীর মাছ ভেসে যাওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা। ঋণ পরিশোধ নিয়ে এখন দুঃশ্চিন্তায়
পড়েছেন অনেক মৎস্য খামারী।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ১৩শ ৫০ হেক্টর জমিতে থাকা ৭ হাজার ৯শ ১টি পুকুর, ফিশারী ও খামারে মাছ চাষ করেন ৫ হাজার ৮শ ৫৩ জন মৎস চাষী। চলতি গত কয়েক দিনের বন্যায় জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, বাহুবল, নবীগঞ্জ, মাধবপুর, লাখাই ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ওই ৭ উপজেলার ১৩শ ৫০ হেক্টর জমিতে থাকা ৭ হাজার ৯শ ১টি পুকুর, ফিশারী ও খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ফলে ৫ হাজার ৮শ ৫৩ জন খামার মালিকের প্রায় ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, বন্যায় কবলিত হয়ে অনেক পুকুর, ফিশারী ও খামারের মাছ ভেসে যাওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন অনেক মৎস্য চাষী। ঋণ নিয়ে অনেকেই ফিশারী ও পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। বন্যার পানিতে এসব মাছের পোনা ভেসে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধ করা নিয়েও এখন দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
তাছাড়া সরকারী ভাবে মৎস্য খামারের পূর্ণবাসন না থাকায় অনেকেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। চরম এ ক্ষতি পুষিতে উঠতে তাদের কয়েক বছর সময় লাগতে পারে বলে জানান মৎস্য চাষীরা।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের মাছ চাষী মোঃ রমজান আলী জানান, ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে গুঙ্গিয়াজুরী হাওরে থাকা তার ১শ ৩০ শতক ফিশারীতে তিনি ৩ লাখ টাকার মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। কিন্তু বন্যার পানিতে ফিশারীর মাছ ভেসে যাওয়ায় তিনি ৬ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন । ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে তিনি এখন দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন।
একই উপজেলার উত্তর সুলতানশী গ্রামের শাহ আলম (ইজ্জত আলী) জানান, গুঙ্গিয়াজুরি হাওড়ে ১শ ৩০, ১শ ২০ ও ১শ ১০ শতক জায়গার ৩টি ফিশারীতে ৫ লাখ টাকার মাছ চাষ করেন তিনি। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় তার প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যায় কবলিত হয়ে জেলায় ৫ হাজার ৮শ ৫৩ জন মৎস্য চাষীর ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ৭ উপজেলার মৎস্য খামারীদের ক্ষতি পরিমান তালিকা তৈরী করে মৎস্য অফিসের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করা হয়েছে’। ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের সরকারী ভাবে সহযোগিতা করা হবে কি-না ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে খামারীদের পূর্ণবাসনের কোন ব্যবস্থা নেই। তবে বন্যায় কবলিত সারাদেশে ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের পূর্নবাসনের বিষয়ে সরকারী ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর