বন্যার ভয়াল থাবায় জেলা জুড়ে আতংক

admin
  • আপডেট টাইম : জুন ২৩ ২০২২, ২২:৩৬
  • 629 বার পঠিত
বন্যার ভয়াল থাবায়  জেলা জুড়ে আতংক

আখলাছ আহমেদ প্রিয়, হবিগঞ্জ \

হবিগঞ্জে চলতি বন্যার ভয়াল থাবায় গ্রাম-গঞ্জে প্রতিদিন বাড়ছে পানি। এতে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে বিভিন্ন গ্রাম ও এলাকা। এ পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলার ৫১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। তাছাড়া শিশুখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দরিদ্র পরিবারের সাথে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠা শিশুদের খাবার দিতে পারছেন পিতা-মাতারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও শিশুদের জন্য নেই কোনো খাবারের ব্যবস্থা। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে বানবাসীদের যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে, তাতে নেই দুধ, সুজির মতো শিশু খাদ্য।

এদিকে, খোয়াই নদীর পানি নিচে নেমে আসায় স্বাভাবিক রয়েছে। ফলে বানবাসীদের মধ্যে স্বস্থি ফিরে আসে। তবে বিভিন্ন এলাকা নতুন করে প্লাবিত ও গ্রাম-গঞ্জে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। যে কারনে বন্যার অবনতির আশঙ্কা করছেন জেলাবাসী।

 

জেলা তথ্য অফিস সূত্র জানায়, জেলার আজমিরীগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং, লাখাই, বাহুবল, মাধবপুর ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ৫১টি ইউনিয়ন বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় ২৩ হাজার ২শ ৩৫টি পরিবার। জেলায় এ পর্যন্ত ২শ ২৫ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে ১শ ৭১ জন প্রতিবন্ধি রয়েছেন। বন্যার ভয়াল থাবায় জেলায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মধ্যে এ পর্যন্ত ২শ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তাছড়া জেলায় অসুস্থ বন্যার্তদের চিকিৎসা সেবায় ৩০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। তবে বন্যা মোকাবিলায় তৎপর ভ‚মিকা পালন করছে জেলা প্রশাসন। জেলায় বন্যাদূর্গতদের জন্য জেলা প্রশাসনের বরাদ্দকৃত ৫শ মেট্রিকটন চাল এখনো মজুত রয়েছে। বন্যার থাবায় প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামে ঢুকছে পানি। নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে অনেক গ্রামও এলাকা।

এদিকে, খোয়াই নদীর পানি ১ মিটারের নিচে নেমে এসেছে। তবে গ্রাম-অঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন পানি বাড়ার অজানা কারন নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন বানবাসীরা। পাশাপাশি কবলিত বন্যায় শিশুখাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ৩ হাজার ৮শ ৩৫ জন শিশু মধ্যে বেশির ভাগই এখন খাদ্য সংকটে। চাহিদা অনুযায়ী শিশুদের খাবার দিতে পারছেন না অনেক শিশুর পিতা-মাতারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুদের জন্য কোনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি। আশ্রয় কেন্দ্রসহ বানবাসীদের যে ত্রাণ দেয়া হচ্ছে, তাতে নেই দুধ, সুজির মতো কোন প্রকার শিশু খাদ্য। ফলে শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

 

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহ নেওয়াজ তালুকদার বলেন, ‘কয়েকদিনের মধ্যেই বন্যার পানি কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে খোয়াই নদীর পানি ১ মিটারের নিচে নেমে এসেছে। সুনামগঞ্জের পানি কমলেই জেলায় বন্যার পানি কমতে শুরু করবে। জেলার যে কয়েকটি জায়গায় নদী ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে এসব নদীর বাধ মেরামত করা হবে। প্রকল্প পাশ হলেই কাজ শুরু করা হবে’।

হবিগঞ্জ জেলা তথ্য অফিসার পবন চৌধুরী জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ৭টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ’ হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। অসুস্থ বানবাসীদের চিকিৎসা সেবায় ৩০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের লোকজন তৎপর ভ‚মিকা পালন করছেন।

 

 

 

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর