বিয়ানীবাজারের নিম্ন আয়ের মানুষ দুশ্চিন্তায়

admin
  • আপডেট টাইম : মার্চ ০৮ ২০২২, ১৯:৪৮
  • 663 বার পঠিত
বিয়ানীবাজারের নিম্ন আয়ের মানুষ দুশ্চিন্তায়

স্টাফ রিপোর্টার:

ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলছে। কিন্তু আয় বাড়ছে না । তাই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বিয়ানীবাজারের নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। লাগামহীনভাবে পণ্যের দাম বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ায় সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় এখানকার দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।

জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা শাখার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছেন। কেউ যদি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম রাখে তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিয়ানীবাজার পৌর শহরের দিনমজুর আক্তার, খোকন, ভ্যানচালক মাসুম ও রিকশা চালক বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের বেঁচে থাকাই কঠিন। কেননা প্রতিদিনই সব কিছুর দাম বাড়ছে। সে অনুযায়ী তাদের আয় বাড়ছে না। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবই কষ্টে আছেন বলে তাঁরা জানান।

কয়েকটি দোকান ঘুরে জানা গেছে, প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল ১৮০ টাকায় প্রতিলিটার বিক্রি হচ্ছে। সরিষার তেল ২২০ টাকায়। যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি। পোলট্রি মুরগির ডিম হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৩৫ টাকায়। পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগে ৪০-৪৫ টাকা ছিল। শুধু সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, ডিমই নয় অন্যান্য পণ্যের দামও আকাশছোঁয়া।

ফতেহপুর এলাকার অস্থায়ী বাসিন্দা আক্তার হোসেন। কাজ করেন দিনমজুরের। তিনি বলেন, প্রতিদিন কাজ পান না। কাজ পেলে ৪০০ টাকা পান। কিন্তু পাঁচ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বাসা ভাড়া দিয়ে তার দিন কোনোভাবেই চলে না। সেই সঙ্গে ভোজ্যতেলে দাম বৃদ্ধির কারণে তিনি দুই চোখে অন্ধকার দেখছেন।

নয়াগ্রামের বাসিন্দা মাসুম মিয়া। স্ত্রী ও চার ছেলেকে নিয়ে তাঁর সংসার। তিনি বলেন, এক ছেলেকে কাজে দিয়েছেন। বাকিরা বিভিন্ন ক্লাসে পড়াশোনা করে। ভ্যান চালিয়ে দিনে তিনি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কামাই করলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দুচোখে অন্ধকার দেখছেন মাসুম মিয়া। তিনি আরও বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে মরণ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’

রিকশা চালক বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে তিনি ৬০০ টাকা রোজগার করেন। রিকশার মালিককে দিতে হয় ২০০ টাকা। বাকি টাকা দিয়ে তাঁর কোনো রকম চলতে হয়। তাঁর সংসারে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করে কিনা জানতে চাইলে বিল্লাল বলেন, ‘পড়াশোনা করব কি? অভাবে দুই বেলা তাদের ভালো করে খাবারেই দিতে পারি না। এখনতো যেভাবে দ্রব্যের দাম বাড়ছে। তাতে করে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে পড়েছে। নিম্ন আয়ের এসব মানুষের আবেদন সরকার যেন গরিব মানুষের কথা চিন্তা করে দ্রব্যমূল্যের দাম কমায়।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী শামীম আহমদ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য বড় বড় কোম্পানি দায়ী। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই।

সিলেট জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। কেউ যদি সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম রাখে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর