ধর্মঘট কি শেষ হচ্ছে আজ ?

admin
  • আপডেট টাইম : নভেম্বর ০৭ ২০২১, ০৯:৫৭
  • 861 বার পঠিত
ধর্মঘট কি শেষ হচ্ছে আজ ?

নিউজ ডেস্কঃ

টানা তৃতীয় দিনের মতো চলা পরিবহণ ধর্মঘটে অচল দেশ। শনিবার থেকে লঞ্চ বন্ধ থাকায় বাড়তি ভোগান্তি যোগ হয়েছে। সড়কে বাস ও ঘাটে লঞ্চ না পেয়ে জনসাধারণের দুর্ভোগের শেষ নেই।  তাদের প্রশ্ন— কখন শেষ হচ্ছে এই চরম দুর্ভোগের।

পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতারা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত সরকার জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের ঘোষণা না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।

এমতাবস্থায় পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয় নিয়ে বৈঠকে বসেছে সরকার।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় এ বৈঠক শুরু হয়। আজকের বৈঠকে বাসের ভাড়া বাড়ানো নিয়ে আলোচনা করবেন মালিকরা।

জানা গেছে, জ্বালানি তেলের বাড়তি দামসহ ১৯ খাতের ব্যয় ধরেই ভাড়া নির্ধারণ করার প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে লঞ্চমালিকরাও তাকিয়ে আছেন আজকের বৈঠকের দিকে। জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাবের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় শনিবার থেকে লঞ্চ চালানো বন্ধ রেখেছেন মালিকরা। পরিপ্রেক্ষিতে একই দাবিতে সরকারের সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন লঞ্চমালিক মালিকরা।

আজ বিকাল ৩টায় মতিঝিলের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান। তিনি জানান, বৈঠকে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌসচিব ও বিআইডব্লিউটি উপস্থিত থাকতে পারেন।
বাস, ট্রাক কিংবা লঞ্চমালিকরা কেউ-ই এই অচলাবস্থা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে করেননি।

শনিবার দুপুরের পর লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চলমান পরিবহণ ধর্মঘট নতুনমাত্রা পায়।
এর আগে শুক্রবার থেকে বাংলাদেশের সব ধরনের বেসরকারি উদ্যোগের সড়ক পরিবহণ বন্ধ হয়ে যায়, যা এখনও চলমান আছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষকে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

নতুন করে বাসভাড়া বাড়ার আতঙ্কে আছেন যাত্রীসাধারণ। প্রতিটি ধাপেই বাড়তি দর যুক্ত করে নতুন ভাড়া নির্ধারণের দাবি করেছেন মালিকরা। ২০১৯ সালে দূরপাল্লার ৫২ আসনের বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা ৭ পয়সা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত বাসে ২ টাকা ২১ পয়সা প্রস্তাব করেছিল বিআরটিএ।
ওই হারের চেয়ে আরও বেশি ভাড়া নির্ধারণের দাবি করছেন তারা। বর্তমানে দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৪২ পয়সা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর বাসে ১ টাকা ৭০ পয়সা ভাড়া নির্ধারিত আছে।

অপরদিকে পণ্যবাহী ট্রাক ধর্মঘট নিরসন নিয়ে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পরিবহণ নেতাদের একাংশের বৈঠক হলেও তা সফল হয়নি। এ অবস্থায় তেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহারসহ কয়েকটি দাবিতে পণ্যবাহী ট্রাক ধর্মঘট চালিয়ে যেতে অনড় অবস্থায় রয়েছেন মালিক-শ্রমিক নেতারা।

পরিবহণ খাতের অচলাবস্থা নিরসনের উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বাসের ভাড়া আমরা নির্ধারণ করে থাকি। ট্রাকের ভাড়া নির্ধারণ করা হয় না। তেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহারের দাবিতে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার বিষয়টি আমাদের আওতাধীন নয়। যৌক্তিক কারণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। তেলের দাম কমানোর এখতিয়ার ওই মন্ত্রণালয়ের। তিনি বলেন, বাস ভাড়ার বিষয়টি আমরা দেখছি। সবার জন্য ভালো হয় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিদ্যমান ভাড়ার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ অতিরিক্ত বাড়াতে সরকার রাজি হলে তারা আজই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেবেন।

তারা বলেন, ২০১৯ সালেই ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ওই সময়ে সড়ক পরিবহণ আইন নিয়ে আন্দোলনের কারণে ওই সময়ে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। মালিকরাও চুপ ছিলেন। গত দুই বছরে যন্ত্রাংশ ও তেলের দাম বেড়েছে।

দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ভাড়া না বাড়ালে ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে। আর আমাদের দাবি মেনে নিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে।

জানতে চাইলে এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ যুগান্তরকে বলেন, ব্যয় বিশ্লেষণ কমিটি সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ভাড়া নির্ধারণ করবে। ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা হলেই মালিকরা বাস চালাবেন।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর