হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে জরাজীর্ণ পুরাতন মসজিদে জীবনের ঝুঁকিতে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লীগন

admin
  • আপডেট টাইম : অক্টোবর ০৯ ২০২১, ০৯:৪৬
  • 885 বার পঠিত
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে জরাজীর্ণ পুরাতন মসজিদে জীবনের ঝুঁকিতে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লীগন

 

বানিয়াচং প্রতিনিধিঃ
হবিগন্জের বানিয়াচং উপজেলায় সদরের ভিতরে অবস্হিত জরাজীর্ণ পুরাতন একটি মসজিদে জীবনের ঝুকি নিয়ে নামায পড়েন মুসল্লীগন।
ঐতিহ্যেবাহী মসজিদ হিসাবেও জেলায় নেই কোন এর নাম।মসজিদটি বিভিন্ন সময়ে সংস্কার ও মেরামত করা হলেও এলাকাবাসী দীর্ঘদিন যাবৎ পুনঃনির্মাণের দাবী করে আসছেন।
সরেজমিনে ৮ই অক্টোবর(শক্রুবার) জুম্মার নামাজের পরে বিকাল সাড়ে ৩টার বানিয়াচং উপজেলার ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের চানপাড়া গ্রামে অবস্থিত সোনা উল্লা মসজিদ প্রকাশ চানপাড়া জামে মসজিদে গিয়ে দেখা যায়,মসজিদটি প্রায় শতবর্শী একটি পুরোনো মসজিদ। বর্তমানে মসজিদটি জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে।
মসজিদটির চারিপাশ্ববর্তী দেয়ালে অসংখ্য ফাটল রয়েছে।স্থানে স্থানে পলেস্তারা খসে পড়েছে।মসজিদের দেয়ালে বিভিন্ন স্থানের ইট খসে পড়েছে।দেয়ালগাত্রে নেই কোন ধরনের অলংকরন।পুরো মসজিদের দেয়ালে শেওলা জমে ড্যামেজ হয়ে গেছে।
ইতিমধ্যে মসজিদের মিম্বরের দুটি কলামের মিনার ভেঙ্গে পড়েছে।উত্তর ও দক্ষিন দিকের দরজার উপরে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে।
মসজিদের ভিতরে প্রশস্ততা কম থাকার কারনে মাত্র তিন কাতারে নামাযের ব্যাবস্থা রয়েছে।যে কারনে মুসল্লীদের জায়গা হয়না।
বর্তমানে মসজিদটি পুনঃসংস্কার করা খুবই জরুরী হয়ে পড়ছে।
মসজিদটি প্রাচীন মুসলিম শাষনামলের নয়।যে কারনে প্রাচীন কোন নিদর্শন কিংবা ঐতিহ্য বহন করছেনা।
এ ব্যাপারে কথা হয় মসজিদটির নিয়মিত মুসল্লী আবু লেইছ(৮০)‘র সাথে তিনি বলেন,আল্লাহর ঘরে মানুষ নামাযে আসবে ভয়হীনভাবে কিন্তু অনেকেই ভয়ে আসতে চায়না।
মুসল্লী আব্দুল মান্নান লস্কর বলেন,আরও আগেই মসজিদ ভেঙ্গে পড়ার কথা আল্লাহপাক এতদিন যাবৎ শুধু মুসল্লীদের মায়া ও দয়া করার কারনে রক্ষা করেছেন।
কিন্তু এখন আমাদের দায়িত্ব হলো এটা আবার ভালোভাবে ঠিকঠাক করা।
মসজিদটির পুনঃনির্মাণ কমিটির সেক্রেটারী সাবেক ছাত্রনেতা আব্দুল হালীম সোহেল জানান,মহল্লাবাসী অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়েছে মসজিদখানা পুনঃনির্মাণ করার জন্য।কিন্তু কতিপয় ব্যাক্তি এটিকে প্রাচীন ঐতিহ্য হিসেবে দেখিয়ে প্রশাসনের নিকট ভূলভাবে উপস্থাপন করে পুনঃনির্মাণ কাজে বাধাগ্রস্থ করছে।
এক পর্যায়ে আব্দুল হালিম সোহেল প্রশ্ন রাখেন,কোন দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব কে নিবে?
৫ মহল্লার সর্দার আব্দুর রশীদ মেম্বার জানান,মসজিদটি প্রায় ১১০ বছর পূর্বে চানপাড়া মহল্লার জনৈক সোনা উল্লা মিয়া নির্মাণ করেছিলেন।কিন্তু পরবর্তীতে তাহার ওয়ারিশানগন মহল্লাবাসীকে রক্ষনাবেক্ষন করার জন্য সমজিয়ে দিয়েছেন।মসজিদের সমুদয় ভূমি বর্তমানে মহল্লার লোকের নামে রেকর্ডভূক্ত।
১২ মহল্লার সর্দার এনামূল হোসেন খান বাহার জানান, মসজিদটি সুলতানী আমল কিংবা মোঘল আমলের নয়।
এটি ৪শ বছরের কোন পুরাকীর্তি বা ঐতিহ্যও নয়।আমরা এর পুনঃসংস্কার চাই। কোন বাধা বিপত্তি চাইনা।
কারন মসজিদটি জেলার ঐতিহ্যের তালিকায়ও নাম নেই বলে জানাযায়।
চানপাড়া মহল্লার সাবেক সর্দার লেচু মিয়া ক্ষোভের সহিত বলেন,আল্লাহ্ পাকের ঘর নিয়ে কেন এই নোংরা রাজনীতি করে মুসল্লীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা।
একতো মসজিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নামাজ আদায় করতে হচ্ছে।আবার পুনঃসংস্কার করার উদ্যেগ নেওয়া হলে এতেও বাঁধা প্রদান করা হচ্ছে।
কিন্তু আমরা চাই সরকার যাহাতে এই বিষয়টি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মসজিদটি পুনঃসংস্কারের ব্যাবস্হা করেন এবং এই মসজিদটি জেলার ঐতিহ্যবাহী মসজিদ হিসেবে সরকারি ভাবে লিপিবদ্ধ করারও জোরদাবী জানাচ্ছি।

আকিকুর রহমান রুমন।
(বানিয়াচং)হবিগঞ্জ প্রতিনিধি।
৮ই অক্টোবর ২০২১ইং।
মোবাইলঃ-০১৭১৭-২৮২৮৭১।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর