মাধবপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় বিয়ানীবাজারের আমেরিকা প্রবাসি নিহত

admin
  • আপডেট টাইম : জানুয়ারি ১৬ ২০২০, ০৯:৪৯
  • 1369 বার পঠিত
মাধবপুরে সড়ক দূর্ঘটনায় বিয়ানীবাজারের আমেরিকা প্রবাসি নিহত

ডেস্ক নিউজঃ মা তুমি কেমন আছ? খাওয়া-দাওয়া ঠিক মতো করছো তো? আগামীকাল দেশে আসবো মা’। মঙ্গলবার মায়ের সাথে মোবাইল ফোনে কথাগুলো বলছিলেন বিয়ানীবাজারের আমেরিকা প্রবাসী রুহুল আমিন। কিন্তু মায়ের মুখ আর দেখা হলো না তার। গ্রীণকার্ড পেয়ে ২৪ বছর পর দেশে ফিরে বাড়ি পৌছার পথে বুধবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের মাধবপুর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি। ছেলের মৃত্যু সংবাদে বার বার মাটিতে পড়ে মূর্ছা যাচ্ছেন তার মা।

নিহত রুহুল আমিন বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের খশির নামনগর এলাকার আলিম উদ্দিনের বড় ছেলে।

জানা গেছে, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাইক্রোবাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আমেরিকা প্রবাসী রুহুল আমিন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় চালকসহ রুহুল আমিনের ৪ স্বজন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে বাক্ষণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন- নিহত রুহুল আমিনের বাবা আলিম উদ্দিন, ছোট ভাই নুরুল আমিন ও ফখরুল আমিন, মামাতো ভাই এমরান আহমদ এবং বিয়ানীবাজার পৌরশহরের পণ্ডিতপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাইক্রো চালক বাদশাহ মিয়া। আহতদের মধ্যে নুরুল আমিন ও চালক বাদশাহ মিয়ার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

নিহত রুহুল আমিনের স্বজনরা জানান, পরিবারের ৫ ভাইবোনের মধ্যে রুহুল আমিন সবার বড়। খায়রুল আমিন নামের এক ভাই ব্রাজিল হয়ে দুবছর আগে আমেরিকা পাড়ি দিয়েছে। ছোটভাই নুরুল আমিন ও ফখরুল আমিন এবং ছোটবোন লেখাপড়া করছে। ১৪/১৫ বছর বয়সে আমেরিকা যান রুহুল আমিন। কিন্তু গ্রীণকার্ড পেতে দীর্ঘ ২৪ বছর সময়ে কেটে গেছে প্রবাসে। গীণকার্ড পেয়েই ২৪ বছর কাটানোর পর মাকে দেখতে আর বিয়ে করতে ৬ সপ্তাহের জন্য দেশে আসছিলেন নিহত রুহুল আমিন।

স্বজনরা আরো জানান, মঙ্গলবার মায়ের সাথে শেষ কথা হয় তার। ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে আনতে মাইক্রোবাস নিয়ে সেখান যান বাবা আলিম উদ্দিন, ছোট দুই ভাই নুরুল আমিন ও ফখরুল আমিন এবং এক আত্মীয়া। বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে বিপরীতদিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।

দীর্ঘদির পর দেশে ফেরার ব্যাপারে রোমাঞ্চিত ছিলেন রুহুল আমিন। আমেরিকার বিমানবন্দরে বসেই তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘২৪ বছর পর বাংলাদেশে যাচ্ছি’।

এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আসার পথে রয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রামের বাড়িতে আসার পর তার জানাজা ও দাফনের সময়সূচি জানানো হবে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।

এদিকে, প্রবাসী রুহুল আমিনের মৃত্যুর সংবাদ যেন মেনে নিতে পারছেন না তার পরিবার-পরিজন ও এলাকাবাসী। তার মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর