এবার শহীদদের নাম রাজাকারে তালিকাভুক্তির আশঙ্কা সেই মুক্তিযোদ্ধাকন্যা ডা. মনীষার

admin
  • আপডেট টাইম : ডিসেম্বর ১৯ ২০১৯, ১১:১৫
  • 1183 বার পঠিত
এবার শহীদদের নাম রাজাকারে তালিকাভুক্তির আশঙ্কা সেই মুক্তিযোদ্ধাকন্যা ডা. মনীষার

ডেস্ক রিপোর্টঃ

গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধাদের নাম রাজাকারের তালিকায় আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বরিশালের মুক্তিযোদ্ধাকন্যা ও গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী। তিনি এবার শহীদদের নাম রাজাকারের তালিকায় ঢুকে পড়ারও আশঙ্কা করেছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বরিশাল জেলা বাসদের ফকিরবাড়ি রোডের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের যুক্ত করে আলাদা কমিশন গঠন করে রাজাকারের তালিকা প্রস্তুত, সদ্য প্রকাশিত তালিকা স্থগিত নয়, বাতিল এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের পদত্যাগ দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ডা. মনীষা বলেন, দলীয় ও আমলানির্ভর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়টি থেকে আবারও রাজাকারের তালিকা প্রণয়ন করলে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের নাম আসতে পারে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের যুক্ত করে আলাদা কমিশন গঠনের মাধ্যমে রাজাকারের তালিকা ফের প্রস্তুত করতে হবে। পাশাপাশি রাজাকারের তালিকা তৈরির সঙ্গে যুক্তদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বরিশাল জেলা বাসদের ফকিরবাড়ি রোডের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের যুক্ত করে আলাদা কমিশন গঠন করে রাজাকারের তালিকা প্রস্তুত, সদ্য প্রকাশিত তালিকা স্থগিত নয়, বাতিল এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের পদত্যাগ দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম ধাপে ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। বিজয় দিবসের আগের দিন প্রকাশিত ওই তালিকায় গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধাদের নামও পাওয়া গেছে।

তাদের মধ্যে একজন অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী। যার ক্রমিক নম্বর ১১২, পৃষ্ঠা নম্বর ৪১১৩। এই গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা নিয়মিত ভাতাও পেয়ে আসছেন।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তার মেয়ে ও বরিশাল জেলা বাসদ সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী।

এ ঘটনাকে নিজের ‘রাজনীতির খেসারত’ আখ্যা দিয়ে তিনি ফেসবুকে লেখেন– ‘মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার পুরস্কার পেলাম আজ। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকে। সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের গেজেটে আমার বাবা এবং ঠাকুমার নাম প্রকাশিত হয়েছে। আমার বাবা অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী একজন গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধা, ক্রমিক নং ১১২, পৃষ্ঠা ৪১১৩। তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও পেয়ে থাকেন। আজ রাজাকারের তালিকায় তিনি ৬৩ নম্বর রাজাকার!’

ডা. মনীষা আরও লেখেন– ‘আমার ঠাকুরদা অ্যাড. সুধীর কুমার চক্রবর্তীকে পাকিস্তানি মিলিটারি বাহিনী বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। তিনিও ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত। তার সহধর্মিণী আমার ঠাকুমা উষা রানী চক্রবর্তীকে রাজাকারের তালিকায় ৪৫ নম্বরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’

ডা. মনীষার এই স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরে বরিশালে এটি তোলপাড় সৃষ্টি করে।

আজকের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা বাসদের সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত রাজাকারের তালিকাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও অপমানজনক। কারণ এতে এমন সব ব্যক্তির নাম এসেছে, যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এবং লড়াই করেছেন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে। কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেছেন। এমনকি শহীদ পরিবারের সদস্যদের নামও রয়েছে তালিকায়। অথচ এতে নেই চিহ্নিত অনেক রাজাকারের নাম।

মনীষা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে সদ্য ঘোষিত রাজাকারের তালিকা স্থগিত করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না। এটি বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমরা মন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করছি। যদি তিনি পদত্যাগ না করেন, তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, দলীয় ও আমলানির্ভর মন্ত্রণালয়টি থেকে আবারও রাজাকারের তালিকা প্রণয়ন করলে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের নাম আসতে পারে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের যুক্ত করে আলাদা কমিশন গঠনের মাধ্যমে রাজাকারের তালিকা ফের প্রস্তুত করতে হবে। পাশাপাশি রাজাকারের তালিকা তৈরির সঙ্গে যুক্তদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মনীষা চক্রবর্তী বলেন, স্বরাষ্ট্র ও মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের অবহেলা এবং ব্যর্থতায় রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের নাম এসেছে। রাজাকারদের তালিকা তৈরি করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ৬০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছিল। সে টাকার হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করারও দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বাসদের আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুমন, বরিশাল রিকশা-ভ্যান শ্রমিক চালক ইউনিয়নের সভাপতি দুলাল মল্লিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানি বাহিনীকে নানাভাবে সহায়তা করেছে,

0Shares
এই ক্যাটাগরীর আরো খবর